1. sajbela24@gmail.com : দৈনিক সাঁঝবেলা : দৈনিক সাঁঝবেলা
  2. info@www.dainiksajbela.com : দৈনিক সাঁঝবেলা :
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নড়াইল-২ আসনে নির্বাচনি প্রস্তুতি জোড়দার, বর্ধিত সভায় ঐক্যবদ্ধ কাজের আহবান ভিপি নূরের। গণঅধিকার একটি গণমুখী, স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। কৃষি অধিদপ্তরের উদ্যোগে বাকেরগঞ্জে “পার্টনার ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস” অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সংগঠন ও নেতৃত্ব বাকেরগঞ্জ উপজেলা উন্নয়ন ভাবনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত। ঔষধ শিল্পের বিকাশে উচ্চশিক্ষিত তরুণ মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের ভূমিকা অনন্য। অরাজনৈতিক সেলিব্রেটিদের রাজনীতি থেকে দূরে থাকা উচিত। কেন্দ্রীয় ফারিয়া সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে ঔষধ শিল্প সমিতির সাথে আলোচনায় আগ্রহী। খালি বাসার মেইন গেটের তালাভাঙ্গা রহস্যজনক।

নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমঃ বাতিলেই সমাধান।

  • প্রকাশিত: সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪
  • ২১৭ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্টঃ

সদ্য পদত্যাগ করা সরকারের একটি অপরিকল্পিত, অগণতান্ত্রিক ও অপরিণামদর্শী উচ্চাকাঙ্ক্ষার নাম নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তে দেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে আমদানিকৃত এই শিক্ষাক্রমের ভার চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালে এই প্রক্রিয়ার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত শিক্ষাক্রম বিষয়ে কারো কোনো পরামর্শ কানে তুলেনি সরকারের কর্তাব্যক্তিরা। এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সাথে জড়িত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ের শিক্ষক ও প্রশিক্ষকের হাজারো প্রশ্নের সামনে চুপ থেকেছেন। শিক্ষাক্রম নিয়ে যেকোনো ধরনের প্রশ্ন করতে বারবার নিরুৎসাহিত করেছেন। এরপরও কোনো কোনো শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আগত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে প্রশ্ন করতে শুরু করলে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে থামানো হয়েছে। প্রশিক্ষণ থেকে নাম বাদ দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সর্বত্র এই ধরনের লুকোছাপার কারণে পরিষ্কার ধারণা না পাওয়ায় শিক্ষকরা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরকে কোনো উপায়েই বুঝ দিতে পারেননি। ফলে শিক্ষাক্রমটি জনমত গঠনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ব্যাপক উপস্থিতি এটিই প্রমাণ করে।

নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে অকারণে তাড়াহুড়ো করতে দেখা গেছে। এটি চালুর পূর্বে সংশ্লিষ্ট শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক, মূল্যায়ন নির্দেশিকা, টিজি (টিচার্স গাইড) ও প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে নিতে হয়। পরিতাপের বিষয় হলো— সরকার প্রস্তুতির পঁচিশ ভাগ সম্পন্ন করেই বাস্তবায়নে নেমে পড়ে। এর ফলে সর্বত্র একধরণের অনিশ্চয়তা ও হাহাকার ছড়িয়ে পড়েছে। তাছাড়া এর জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়নি। ফলে শিক্ষাবর্ষ শুরুর পরও পাঠ্যপুস্তক, টিজি ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল ছাপানো ও সরবরাহ করা যায়নি। পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল ছাড়া সম্পূর্ণ বায়বীয় ধারণার উপর শিক্ষক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা হয়েছে। ফলে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন বিষয়ে অপর্যাপ্ত তথ্য ও অস্পষ্ট ধারণা নিয়ে শিক্ষকগণকে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করতে হয়েছে। পরে এ সংক্রান্ত নানাবিধ জটিল নির্দেশনা অনলাইনে প্রকাশ করা হলেও তা অনেকেই আমলে নেননি। ফলে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা ও মূল্যায়নের কাজ নির্ধারিত তরিকা মতো না করে শিক্ষকরা নিজেদের মতো করেই চালিয়ে নিচ্ছেন। অর্থাভাবে দ্বিতীয় ধাপের শিক্ষক প্রশিক্ষণ সূচিও পরিবর্তন করতে হয়েছিল। তারপরও প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ সম্মানীর অর্থ সময় মতো পরিশোধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশের মতো একটি স্বল্পোন্নত দেশে এ ধরনের শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। আমাদের বিদ্যমান ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত, শিক্ষা অবকাঠামো এবং আর্থসামাজিক অবস্থা এধরনের শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে সহায়ক নয়। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকের ভূমিকা ও কাজের পরিধি অনেক বেড়েছে, কিন্তু তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি। বেসকারি এমপিওভুক্ত স্কুলের একজন শিক্ষক মাসে ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা বেতন পান, যা দিয়ে বর্তমান বাজারে একটি পরিবার চলে না। ফলে নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষকদের সমর্থন আদায় করা ও বাড়তি কাজে আগ্রহী করা যায়নি।

বাংলা বিষয়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের ছড়া, কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও গানের কথা লিখতে শেখানোর পাঠ আছে। বাংলা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী শিক্ষকের পক্ষেও এগুলো ক্লাসে শেখানো সম্ভব হবে না। এছাড়া শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের নাচ, গান, আবৃত্তি, চিত্রাংকন শেখাতে হয়। এসব শেখানোর মতো দক্ষ শিক্ষক কোনো প্রতিষ্ঠানেই কার্যত নেই। তাহলে এগুলোর শিখনফল কীভাবে অর্জিত হবে? সুতরাং স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।

এই শিক্ষাক্রমের সবচেয়ে বড় গলদ এর মূল্যায়নে। শিক্ষাক্রমের যাত্রা শুরুর তিন বছর পার হলেও এর মূল্যায়নের রূপরেখা এখনো চূড়ান্ত করা যায়নি। মূল্যায়নের রূপরেখায় বারবার পরিবর্তন দেখে কর্তাদের কিংকর্তব্যবিমূঢ় চেহারাটা সহজেই অনুমান করা যায়। ধারাবাহিক মূল্যায়নে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীর যে ফলাফল বোর্ডে পাঠাবেন তার নির্ভরযোগ্যতা রক্ষার কোনো উপায় নেই। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল নির্ণয়ের যে মানদণ্ড ঠিক করা হয়েছে সেখানেও প্রশ্ন রয়েছে। বর্তমানে অর্ধ-বার্ষিক ও বার্ষিক সামষ্ঠিক মূল্যায়নের নির্দেশনা পরীক্ষার আগে অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে। মূল্যায়নে প্রাপ্ত ফলাফল শিক্ষকদেরকে নৈপুন্য অ্যাপে ইনপুট দিতে হচ্ছে। দুর্বল ও স্বল্পগতির ইন্টারনেট অবকাঠামো এবং অনেকে পুরোনো ডিভাইস ব্যবহারের কারণে এসব কাজ সময়মত ও সঠিকভাবে করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। এছাড়া মূল্যায়নে যেসব সমস্যা সমাধান করতে দেওয়া হয় সেগুলোর সমাধান ইউটিউবে আগেই চলে আসে। কার্যত কোনো দক্ষতা অর্জন না করেও সমস্যাগুলো সমাধান করে দিচ্ছে সকলে। ফলে মূল্যায়নের গ্রহণযোগ্যতা থাকছে না।

এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আরেকটি অনুমিত শর্ত ছিল বাজারে নোট/গাইডবই না থাকা। কিন্তু গাইডবই প্রকাশ ঠেকানোর কোনো চেষ্টাই করা হয়নি। ফলে পাঠ্যপুস্তকের সব সমস্যা গাইডবই দেখে সমাধান করছে শিক্ষার্থীরা। কাঙ্ক্ষিত দক্ষত অর্জনের কোনো সুযোগ থাকছে না।

নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম চালুর তিন বছর পরেও একটি পথ খুঁজে পায়নি। ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক কারোরই আস্থা অর্জন করতে পারেনি। বাসায় লেখাপড়া করা, পরীক্ষা দেওয়া, ফলাফল ঘোষণা এসব হারানোর আক্ষেপে হাপিত্যেশ করতে দেখা যায় সবাইকে। আগামীর উচ্চশিক্ষা, ভর্তি পরীক্ষা, চাকরির পরীক্ষা কীভাবে হবে এসব নিয়ে অনিশ্চয়তা তো আছেই। এহেন পরিস্থিতিতে এই শিক্ষাক্রম বাতিল করে পুরোনো অবস্থায় ফিরে যাওয়াকেই শ্রেয় মনে করছেন সংশ্লিষ্টজনেরা।

লেখক: মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভূঞা, শিক্ষক ও লেখক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
Theme Customized By BreakingNews