আজ থেকে ৮/১০ বছর পূর্বে কোন এক কোম্পানির স্বনামধন্য মার্কেটিং অফিসারের নির্দেশে ঐ কোম্পানির প্রতিনিধিরা অনিচ্ছাসত্বেও প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে বাধ্য হয়েছিল যা ছিলো রোগীর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যগত তথ্য হাতিয়ে নেয়ার শামিল। হয়তবা ঐ বিজ্ঞ ব্যক্তির খোঁজ এখন আর কেউ কোথাও পাবে না কেননা তার দেখাদেখি এটা ঔষধ সেক্টরে সার্বজনীন প্রাকটিসে পরিণত হয়েছিল যার দাবিদার অনেকে।
পরবর্তীতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের চাপে দেশের সমস্ত ঔষধ কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা শুরু করে ছবি তোলার প্রতিযোগিতা, বিরক্ত হয় রোগী ও জনগণ।
এরফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রতিনিধিদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা হতে হতো যা ছিলো নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। ফলে চাকরি করতে এসে মানসম্মান ও ভাবমূর্তি নষ্ট হয় লক্ষ লক্ষ উচ্চশিক্ষিত প্রতিনিধিদের।
অবশেষে ঔষধ কোম্পানির মালিকপক্ষের সংগঠন "ঔষধ শিল্প সমিতি" ছবি না তোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে সার্কুলার জারি করেছে যা বাস্তবায়ন করবে স্ব স্ব কোম্পানিগুলো তাদের প্রতিনিধিদের নির্দেশ প্রদানের মাধ্যমে।
ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভদের প্রিয় সংগঠন কেন্দ্রীয় ফারিয়া দীর্ঘদিন যাবত এই অনৈতিক কাজটিসহ কিছু দাবি দাওয়া কর্তৃপক্ষের নজরে নিয়ে আসার চেষ্টা করে আসছিল কিন্তু মালিকপক্ষ গুরুত্ব দেয় নাই। ৫ আগস্টের পূর্বে শিল্প সমিতি ছিলো দরবেশের নিয়ন্ত্রণে তাই ফারিয়া তাদের দাবি-দাওয়া সর্বোচ্চ পর্যায় পৌঁছাতে বার বার ব্যর্থ হয়। ফারিয়া ঔষধ শিল্প বিকাশে সর্বদা সচেষ্ট কেননা এখানে তাদের ২৫০০০০ সদস্য কাজ করছে এবং আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে । দেশের উন্নয়নে এই সেক্টর ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলছে যা অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।
ফারিয়া সংস্কারে বিশ্বাসী কিন্তু সেটা হতে হবে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, দেশের বেকারত্ব, বর্তমানে প্রচলিত মার্কেটিং পদ্ধতি অনুসরণে। এখান থেকে ধাপে ধাপে আধুনিক পদ্ধতিতে যেতে হবে।
বিগত সরকার ফিনল্যান্ডের শিক্ষা ব্যবস্থা এদেশে চালু করতে চেয়েছিল কিন্ত তারা ভাবে নাই ঐ দেশে অপরাধী নেই, জনগণ মিথ্যা কথা বলে না, শিক্ষার্থীরা নকল করে না তাই সেই ব্যবস্থা এখানে চালু করতে গিয়ে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছির তাই আবার ফিরতে হয়েছে পুরাণো পদ্ধতিতে।
এই সেক্টরের সংস্কারে ফারিয়া নেতৃবৃন্দের সাথে কোনো আলোচনা সংস্কার কমিশন বা শিল্প সমিতি করেছে বলে আমার জানা নেই অথচ ডাক্তারদের নিত্যনতুন তথ্য প্রদান, বাজারে ঔষদের সরবরাহ নিশ্চিতে কাজ করে এরা। করোনার সময় ফার্মেসিতে ঔষদের সরবরাহ নিশ্চিতে মাঠে ছিল এই আড়াই লক্ষ মেডিকেল প্রতিনিধি যার ফলে কেউ বলে নাই ঔষধ পায় নাই ।
বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার বেকারত্ব নিরসনে রাত-দিন কাজ করছে। সংস্কার কমিশনের সিদ্ধান্ত
বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ফারিয়ার নেতৃবৃন্দের সাথে "ঔষধ বিপণনের ব্যাপারে" শিল্প সমিতির আলোচনা প্রয়োজন বলে কেন্দ্রীয় ফারিয়ার নেতৃবৃন্দ মনে করে কেননা এখানে আড়াই লক্ষ পরিবারের রুটি রুজির প্রশ্ন।
লেখকঃ লায়ন সোবহান হাওলাদার
সদস্য, স্থায়ী পরিষদ
কেন্দ্রীয় ফারিয়া,
গণমাধ্যম ও সমাজকর্মী।
#Bangladesh